F গল্পটা মিথ্যে নয় - দ্বিতীয় পর্ব

যাহােক, এই মিথ্যে অভিনয়টা কেনই বা করলাম তা অবশ্যই জানতে চাচ্ছেন? তবে শুনুন আমার বাবার হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন সময় আছে। আমার বাবা আর বাঁচবে না। গতকাল ডাক্তার আংকেল আমাকে ফোন দিয়ে বলে দিয়েছে, তােমার বাবাকে একটু খুশিতে রাখতে আর যা যা খেতে পছন্দ করে তা খাওয়াতে। আমি মানুষের বাসায় গিয়ে টিউশনি করি। দুজন ছাত্রকে বাসায় গিয়ে পড়িয়ে আমি ছয় হাজার টাকা পাই। এই টাকা দিয়ে নিজে থাকি আর বাবার চিকিৎসার খরচ চালাই। এখন বলেন এটুকু মিথ্যে অভিনয় কি খুব বড় অন্যায়। আমি কি খুব বড় অপরাধ করে ফেলেছি? আমি জীবনেও আমার বাবাকে এতটা খুশি হতে দেখিনি। যদি বাবার মুখে হাসি ফুটাতে এর থেকে বড় মিথ্যে বলতে হয় তবে তাই করব। আপনি কখনাে এরকম সিচুয়েশনের মুখােমুখি হয়েছেন? যদি হতেন তাহলে বুঝতেন ঠিক এই সময়টাতে আমার বুকে কত পাহাড় সমান কষ্ট জমাট বেঁধে আছে।


গল্পটা মিথ্যে নয় - দ্বিতীয় পর্ব, গল্পটা মিথ্যে নয়,রোমান্টিক গল্প,ভালোবাসার গল্প,কষ্টের গল্প,বেদনার গল্প,Fact Mohi
গল্পটা মিথ্যে নয় - দ্বিতীয় পর্ব 



আমি সস্তা একটা মেসে থাকতাম। শুধুই থাকতাম তবে খাওয়ার জন্য আমাকে কোনাে টাকা খরচ করতে হতাে না। আমি খাওয়ার এক বিশেষ পন্থা অবলম্বন করতাম। এই যেমন মেসের বুয়া রান্না করে সবার জন্য বাটিতে খাবার রাখত তখন সবার খাবার থেকে অল্প অল্প করে খাবার চুরি করে নিজে খেয়ে নিতাম। এভাবে খেতে গিয়ে একদিন মেসের মেম্বারদের হাতে ধরাও পড়েছি। মেসে এটা নিয়ে আমার বিচারও হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে যদি আরেকবার তাদের খাবার চুরি করি তাহলে আমাকে মেস থেকে বের করে দেওয়া হবে।



এখন আর চুরি করে খাই না। তবে কি আমি না খেয়ে থাকি, এখন আমি আরেকটা বিশেষ ব্যবস্থা করে ফেলেছি। আমার মেসের মানুষগুলাে অনেক খাবার নষ্ট করে। তাই তারা যে ঝুড়িতে খাবারগুলাে ফেলে দেয়, সেই ঝুড়িতে আমি একটা পলিথিন বেঁধে দিয়েছি। এখন সবাই ঝুড়িতে খাবার ফেললেও খাবারগুলাে পলিথিনে আটকে থাকে আর আমি গভীর রাতে উঠে সেই পলিথিন থেকে খাবার বের করে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে, একটা পেঁয়াজ আর লবণ দিয়ে খেয়ে নেই।


আরও পড়ুন,

গল্পটা মিথ্যে নয় সকল পর্ব এক সাথে

গল্প

একজন হকার - সকল পর্ব

Fact Mohi



কিছুদিন আগে একজন ঘুম থেকে উঠে দেখে ফেলে আমি খাচ্ছি। ব্যাস নিয়ম অনুযায়ী আমাকে মেস থেকে বের করে দেয়। আমি ফুটপাতেই থাকতে শুরু করি। আর দিনের বেলায় কাজের সন্ধান করতে থাকি। সন্ধ্যার পর দুইটা স্টুডেন্ট পড়াই। কথায় আছে না, বিপদ যখন আসে তখন চারদিক থেকেই আসে। আমার দুইটা টিউশানিও চলে গিয়েছে। কারণ আমার জামা-কাপড় নােংড়া থাকে এগুলাে বড়লােকেরা মেনে নিতে পারে । ব্যাস আমাকে না করে দিয়েছে। ঠিক এই অবস্থায় আমার চাকরির গল্প তৈরি করি। জানি আমার বাবা আমার চাকরি করা দেখে যেতে পারবে না। তাই তৈরি করি মিথ্যে চাকরির গল্প । আমি জানতাম বাবা খুশি হবে কিন্তু । এতটা খুশি হবে তা আমার ধারণারও বাইরে ছিল। আর মিথ্যে সেই চাকরির সুখবর নিয়েই বাড়ি যাওয়া। হা হা হা দশ কেজি জিলাপি বিতরণ করে আমার নতুন চাকরি সেলিব্রেট করা হলাে।



এখন ঢাকা শহরে থাকার মতাে জায়গা আমার নেই। কিন্তু বাবা সকালেই আমাকে ঢাকা পাঠিয়ে দিল। আমার নতুন চাকরি বলে কথা। বাবা উপদেশ দিয়ে দিল বাবা কখনাে তােমার কাজ অবহেলা করবা না। ঠিকমতাে কাজ করবা। আমার ঢাকা শহরে এখন থাকার মতােই জায়গা নেই আর বাবা আমাকে চাকরির জন্য উপদেশ দিয়ে যাচ্ছে। এটাই নিয়তি, একটা বেকার ছেলের জীবন ঠিক এরকমই হয়। হাজারটা মিথ্যার জন্ম দিয়ে সেগুলােকে নিয়ে বয়ে বেড়াতে হয়।

আরও পড়ুন,
গল্পটা মিথ্যে নয় - সকল পর্ব 
সকল গল্প
মানুষ হতে পারিনি - সকল পর্ব
না পাওয়ার গল্প - সকল পর্ব
পথ শিশু শাওন - সকল পর্ব 
জীবন নাটকের চেয়েও নাটকীয় - সকল পর্ব
একজন হকার - সকল পর্ব
Fact Mohi
সকল চাকরির খবর
অফার 
স্বপ্ন থেকে স্বপ্না - সকল পর্ব
আমরা সুপার হিরাে নয় - সকল পর্ব
হাসমত মিয়ার জাতীয় পেশা - সকল পর্ব
Shuvo Academy
Shuvo Academy YT


ঢাকায় চলে আসি কিন্তু যাব কোথায়। যাওয়ার মতাে যে আমার কোনাে জায়গা নেই, তাই কয়েকদিন ফুটপাতেই থাকতে শুরু করি। একদিন রাতে 1 আমি টঙ্গি এক ওভার ব্রিজের উপর শুয়ে ঘুমাচ্ছিলাম মাঝ রাতে দেখলাম আমার নাকে-মুখে পানি পড়ছে। তবে এটা যে বৃষ্টির পানি না তা আমার বুঝতে দেরি হয়নি। একটু লবণাক্ত আর হালকা গরমযুক্ত পানি। হ্যা এইটা মূত্র, এক পাগল প্যান্ট খুলে আমার মুখের উপর প্রসাব করছে। বাহ কী অপূর্ব দৃশ্য! 

Post a Comment

Previous Post Next Post