F মানুষ হতে পারিনি - প্রথম পর্ব

আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম ক্রীতদাস ব্যবসায়ের সূচনা হয়েছিল আজ থেকে চারশ বছর আগে। যা আজ পর্যন্ত ইতিহাসের এক কালাে অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। আফ্রিকা থেকে আটলান্টিক মহাসাগর পার হয়ে আমেরিকায় দাস ধরে আনার এই ব্যবসায় ইতিহাসে ট্রান্স আটলান্টিক স্লেভ ট্রেড হিসেবে পরিচিত ছিল। 


মানুষ হতে পারিনি - প্রথম পর্ব,মানুষ হতে পারিনি,বাংলা গল্প,Fact Mohi,ভাইরাল গল্প,ভালোবাসার গল্প,রোমান্টিক গল্প,জীবনের গল্প,কষ্টের গল্প,মানুষ হইতে পারলাম নাহ,
মানুষ হতে পারিনি - প্রথম পর্ব 


শুরুর দিকে এই প্রথার নিয়ন্ত্রণ পর্তুগিজ ও স্প্যানিশদের হাতে থাকলেও পরবর্তীতে তা ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, ফ্রান্সসহ ইউরােপের অন্যান্য দেশের হাতে চলে যায়। মানবতা বিরােধী এই জঘন্য অপরাধ আমেরিকার মাটিতে স্থায়ী ছিল প্রায় দুশাে শতাব্দী ধরে।



এখন দিন পালটেছে, মিনুরে এখন আর কেউ এসিড মারে না। এখন মিনুদের সাহেবদের লাল জুতাের নিচে পিষে মরতে হয়। আগে মিনুদের কান্না দেখত গােটা দেশ, আর এখন মিনুদের কান্না শােনে তার শক্ত বালিশ। আমরা আজ সভ্য হয়েছি। আমাদের অপরাধগুলােও পালটে গিয়েছে বেমালুম। আমরা আজ সাহেব হয়েছি। বেমালুম বনে গিয়েছি ভদ্রলােক আর দিন দিন আমাদের বিবেক হয়ে যাচ্ছে নর্দমায় পড়ে থাকা কীটের মতাে। বহু যুগ আগে কৃতদাস প্রথা বিলুপ্ত হয়েছে ঠিকই কিন্তু এখনও বিদায় হয়নি মনের পশুত্ব। আচ্ছা কীভাবে চিনব এদের। কী করেই বা পৃথক করব এদের?


গৃহকর্মী নির্যাতনের পরিসংখ্যান :

মানুষ হতে পারিনি - প্রথম পর্ব,মানুষ হতে পারিনি,বাংলা গল্প,Fact Mohi,ভাইরাল গল্প,ভালোবাসার গল্প,রোমান্টিক গল্প,জীবনের গল্প,কষ্টের গল্প,মানুষ হইতে পারলাম নাহ,


এটা তাে অফিসিয়ালভাবে প্রকাশিত। আপনার ঘরে কিংবা আপনার প্রতিবেশীর বাসায় হওয়া নির্যাতনগুলাের হিসাব যে এই তালিকায় নেই এটা নিয়ে কোনাে সন্দেহ নেই। এই হিসাবগুলােও যদি রাখা হতাে তাহলে সেই নির্যাতনের সংখ্যাটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াত একবার ভাবেন তাে। আজকাল অনেক অপরাধের হিসাবই থাকে না। কারণ আমরা আজ ভদ্রলােক তাই আমাদের করা অপরাধগুলাে সেভাবে পত্রিকায় কিংবা মিডিয়াই আসে না।



 


আমাদের করা অপরাধগুলাের ইংরেজি নাম হলাে : White colour crime অর্থাৎ ভদ্রলােকেদের অপরাধ।


মানিকের শেষ ইচ্ছে


রাত তিনটা, পাশের ফ্ল্যাট থেকে হঠাৎ এক চিৎকার। বেশ জোরেশােরে এলাে সেই চিৎকারের ধ্বনিটি। কিছুক্ষণ পর আবার এভাবে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে একই ঘটনা ঘটতে থাকে। না এটা নতুন কোনাে বিষয় নয় আমার জন্য। প্রতিদিনকার রুটিনের মধ্যে এটিও রয়েছে। এখন আর এসব দেখে বিচলিত হই না। প্রতিদিন রাতেই এমন চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পেয়ে বিছানা থেকে উঠে গিয়ে দেখার চেষ্টা করি। কিন্তু আফসােস, দেখার সৌভাগ্য আমার হয়নি কখনাে।



আমি সামিয়া জাহান। এখানকার নতুন ভাড়াটিয়া। প্রায় দুমাস হতে চলল এই এলাকায় নতুন এসেছি। এই দুমাসের প্রতিটা রাত আমাকে চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে হয়েছে। আশেপাশের কেউ আমার তেমন পরিচিত নয়। তাই আসল রহস্যটা আমি উদঘাটন করতে পারছিলাম না। এমনি কোনাে এক রাতে শুরু হলাে চিৎকার। আশেপাশের ফ্ল্যাট কিংবা আমার প্রতিবেশীরা কখনাে এর প্রতিবাদ করতে দেখেনি কখনাে। শুনেছি লােকটা হাইকোর্টের জজ। সারারাত ধরে মদপান করেন আর বারাে-তেরাে বছরের একজন গৃহকর্মী শিশুকে অত্যাচার করেন। তিনি বিচারক তাই শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা তিনি রাখেন।



বেশ কিছুদিন ধরে রাতে আর চিৎকারের শব্দ শুনছি না। ইদানীং এই চিকার না শুনলে কেমন জানি ঘুম আসে না। আসলে আমার অভ্যেস হয়ে গিয়েছে। প্রতিদিন চিৎকার আর কান্নাকাটির শব্দ শুনে ঘুমাতে যেতাম। অবাক করা বিষয়, গত তিন দিন ধরে আমি কোনাে চিৎকার শুনছি না। এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে শুনলাম, জজের বাড়ির কাজের বাচ্চাটা তিন দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। অবস্থা খুবই ভয়াবহ, বাঁচবে না। বুকের ভিতরটা কেমন জানি একটা নাড়া দিয়ে উঠল পরক্ষণেই শিশুটাকে খুব আপন মনে হতে লাগল। সিদ্ধান্ত নিলাম বাচ্চাটাকে দেখতে যাব। 



পিজি হাসপাতালে ভর্তি ওয়ার্ড নং ২৭। আমি ইউনিভার্সিটির ক্লাস শেষে চলে গেলাম পিজি হাসপাতালে। দেখলাম একটা বাচ্চা ছেলে একা পড়ে আছে বেডের উপর। তার পাশে কেউ নেই। চোখের কোণে জমা রয়েছে এক সাগর পানি। 

Post a Comment

Previous Post Next Post